Bangladesh
Beirut blast kills Bangladeshi national stranded in Lebanon amid Covid-19 pandemic
বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে সেই রনিরই মৃত্যুর খবর আসে তার পরিবারের কাছে। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা গেছেন তিনি।
একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বাবা তাজুল ইসলাম। মা ইনারা বেগম ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
রনির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন রনি। গ্রামের একটি স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি। বাহরাইন প্রবাসী বাবা তাজুল ইসলাম প্রবাসে সুবিধা করতে না পারায় পরিবারের কথা ভেবে রনি বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর্থিক দৈন্যদশার কারণে সুদে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ লেবাননে পাড়ি জমান তিনি। এর মধ্যে রনির বাবা তাজুল ইসলামও বাহরাইন থেকে দেশে ফেরত আসেন। ফলে পরিবারের পুরো চাপ পড়ে রনির ওপর।
পরিবারের জন্য হাসি মুখেই কাজ করে যাচ্ছিলেন রনি। লেবাননের বৈরুতে একটি বিপণি-বিতানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন তিনি। মাসে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে পারতেন বাড়ি। কিন্তু এতো অল্প বেতনের টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। এখনও দুই লাখ টাকার মতো ঋণ পরিশোধ বাকি আছে। লেবাননে আয়-রোজগার কম হওয়ায় অন্য কোনো দেশে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন রনি।
রনির বাবা তাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সর্বশেষ ছেলে রনির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে তার। বাবার সঙ্গে কথা বলে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন রনি। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি তার সঙ্গে। রাতে রনির এক সহকর্মী ফোন করে জানান রনি অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর বুধবার (৫ আগস্ট) ভোরে আবার ফোন করে জানান রনি মারা গেছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা এখন ছেলের মরদেহ দেশে আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।
