Bangladesh

Kustiya celebrates Lalon festival

Kustiya celebrates Lalon festival

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 21 Mar 2019, 07:01 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, মার্চ ২১: কুষ্টিয়া জেলার ছেঁউড়িয়ার বাউল স¤্রাট লালন সাঁইর আঁখড়াবাড়িতে বুধবার শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। সেই সাথে বসছে গ্রামীণ মেলাও। এবারের আয়োজনে মরমী সাধক বাউল স¤্রাট ফকির লালন সাঁইজির অমর বাণী ‘মনের গরল যাবে যখন, সুধাময় সব দেখবি তখন’ প্রতিপাদ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়াজনে এ লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বুধবার ২০ মার্চ সন্ধ্যায় শুরু হওয়া স্মরণোৎসব ও গ্রামীণ মেলা চলবে ২২ মার্চ শুক্রবার পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে লালন একাডেমির শিল্পীরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগণ খ্যাতনামা বাউল শিল্পী ও ভক্তবৃন্দ লালর গীতি গাইবেন। বাউল স¤্রাট লালন শাহের জীবদ্দশায় চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহে পুর্ণিমার রাতে দোলপুর্ণিমার উৎসব উদযাপন করা হতো। সেই থেকে লালন ভক্তরা প্রতি বছরই তাদের কাংখিত এ উৎসব পালন করে থাকে।

 

লালনের জীবন সম্পর্কে বিশদ কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না। তাঁর সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসূত্র তাঁর নিজের রচিত ২৮৮টি গান। কিন্তু লালনের কোনো গানে তাঁর জীবন সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি রেখে যাননি, তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে ‘লালন ফকির’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, ‘ইহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাঁহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশতঃ কিছুই বলিতে পারে না।’

 

লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়।

 

হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুণ বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তার সাথিরা তাঁকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষ লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তাঁর স্ত্রী মতিজান তাঁকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রুষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। এরপর লালন তাঁর কাছে দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন। গুটিবসন্ত রোগে একটি চোখ হারান লালন। ছেউড়িয়াতে তিনি দার্শনিক গায়ক সিরাজ সাঁইয়ের সাক্ষাতে আসেন এবং তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হন।

 

এছাড়া লালন সংসারী ছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর সামান্য কিছু জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। লালন অশ্বারোহণে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন স্থানে যেতেন।