Bangladesh
ISI meets Tarique Rahman before Bangladesh polls?
কিন্তু, এই নির্বাচনের পেছনে কলকাঠি নাড়াচ্ছে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)।
এমনটাই দাবি করেছে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট।
সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, পর্দার পেছন থেকে এই বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে বিশ দলীয় জোটের যে ঐক্যফ্রন্ট তাঁকে মদত দিয়ে চলেছে আইএসাআই।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে 'আইএসআই’র সঙ্গে বসে তারেক রহমান ষড়যন্ত্র করছে ।
তিনি বলেন, "লন্ডনে বসে তারেক রহমান আইএসআই’র সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যেখানে জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকও উপস্থিত ছিলেন। তারা জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াতকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়।"
এই বিষয় ভারতের এক সংবাদ মাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছে।
‘টাইমস অব আসাম’ নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন যে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সরকার প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়েছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা।
নির্বাচনের আগে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা আছে যে বিএনপি-জামায়াত জোটকে সমর্থন দিতে মার্কিন সিনেট ও কংগ্রেসেও আইএসআই নিয়মিত যোগাযোগ করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে এটা মনিটর করতে হবে।
টাইমস অব আসাম নিজেদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছেন যে লন্ডনে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আইএসআই’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা যদিও মনে করছেন যে এই নির্বাচনে বিজয় লাভ করে যদি জামায়াত বিএনপি ক্ষমতায় সে তাহলে দেশে আবার একবার জঙ্গিবাদের উত্থান হবে।
এই বিষয়টি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে, বলে ওনারা মনে করেন।
মোহাম্মদ আলী সিকদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "জামায়াত বিএনপি যে অবস্থায় আছে, এই নির্বাচনে যদি আবারও তারা ক্ষমতায় আসে। তবে পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনী আবারও সেই তৎপরতা শুরু করবে। তারা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সমর্থন দেয়া শুরু করবে। এছাড়া বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোকে তারা অর্থ ও অন্যান্য সমর্থন দেবে।"
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি টেরিঙ্ক নির্বচন নিয়ে কি বলেছেন?
আসন্ন বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন 'স্বাভাবিক ও স্বচ্ছ' হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি টেরিঙ্ক।
বিদেশের সংবাদমাধ্যম ডি ডাব্লুকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়, রেনজি বলেছেন যে উনি সব সময় শুনে এসেছেন যে বাংলাদেশে যখনই নির্বাচন হয় তখন এই দেশে অশান্তি হয় কিন্তু উনি সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র এখনও পর্যন্ত দেখতে পেয়েছেন।
উনি বলেন বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত শান্তির পরিবেশ দেখেছেন।
উনি বলেন, "আমি এই দেশে খুব বেশিদিন হয়নি এসেছি। তবে, আমি শুনেছি আগে যে মানুষ বলেছেন যে এই দেশে যখন নির্বাচন হয় তার আগে বিক্ষোভ ও অশান্তি শুরু হয়।"
"তবে, আমি বলতে পারি এই মুহূর্তে পর্যন্ত এই দেশের পরিস্থিত বেশ শান্তিপূর্ণ আছে," উনি বলেন।
"আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশের মাটিতে এইবার খাঁটি, বিশ্বাসযোগ্য ও স্বতি,নিরবাচন অনুষ্ঠিত হবে," উনি বলেন।
বাংলাদেশের মাটিতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
এই বছর নির্বাচন হতে চলেছে শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে বিরোধী দলদের।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এই মুহূর্তে দুর্নীতি মামলায় সাজা পেয়ে জেলে আছেন।
এই পরিস্থিতিতেই বিএনপি নির্বাচনে লড়ছে। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বয়কট করেছিল।
টেরিঙ্ক বলেন যে বাংলাদেশ গত কিছু বছরে দারুণ অর্থনৈতিক উন্নতি করেছে।
"আমরা বাংলাদেশকে সেই দেশের মানুষদের জন্য স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ স্থানে পরিণত হতে দেখতে চাই," উনি বলেন।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে শেখ হাসিনা ও ওনার আওয়ামী লীগ তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে।
মার্কিন মতামতঃ
একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে মার্কিন কংগ্রেস এই দেশের ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং ভোটারদের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
সেই দেশের মিডিয়া অনুযায়ী, এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়েছে কংগ্রেস সদস্য টেড ইয়োহো, এলিয়ট এনজেল, ব্র্যাড শেরমান, স্টিভ শাবট, জেরাল্ড কনোলি ও ড্যারেন সোটোর উদ্যোগে।
এই বিশেষ বিষয়, মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মোট চারটি প্রসঙ্গ উঠে আসে, সেই দেশের মিডিয়ার রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
ডিসেম্বর ৩০ এই বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনঃ
লন্ডনভিত্তিক ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে’র (ইআইইউ) বাংলাদেশবিষয়ক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন যে আসন্ন নির্বাচনে বিজয় লাভ করে শেখ হাসিনা ও ওনার আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে।
এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি গড়ে প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল যে ৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিষয়ে প্রকাশিত সর্বশেষ কান্ট্রি ব্রিফিংয়ে ইকোনমিস্ট গ্রুপের এই গবেষণা উইংয়ের পক্ষ থেকে ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পাঁচ বছর সময়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অবস্থা কি হতে পারে তার একটি ছবি তুলে ধরেছে লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্জ।
নিজেদের এই লেখায় সন্সথাতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আসন্ন নির্বাচনে আবার একবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে।
৩০ ডিসেম্বর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে।
তবে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বর্তমান মেয়াদের বাকি সময় এবং আগামী সরকারের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকির প্রসঙ্গটিও বারবার তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।
নির্বাচনী প্রচারের সময় জঙ্গি হামলাকে বেশ বড় একটি ঝুঁকি বলে দেখানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলে হয়েছে যে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা বেড়ে যাওয়া ব্যাপকতর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা উসকে দিতে পারে।
প্রতিবেদনে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে যে আগামী পাঁচ বছরের মধ্য বাংলাদেশে থাকা বিদেশিদের ওপর হামলা-আক্রমণ চালানো হতে পারে।
বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে।
আর এই প্রতিবেদনে সেই বিষয় আরও বলা হয়েছে যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আগামী পাঁচ বছরও অব্যাহত থাকবে।
লেখা আছে যে আসন্ন পাঁচ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি গড়ে ৭ দশমিক ৭ হারে হবে।
