Bangladesh
Country was divided but not Nazrul and Tagore: Hasina
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্য কবি নজরুল নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। লেখার কারণে জেল খেটেছেন। আমারাও আমাদের অধিকার আদায় করতে অনেক সংগ্রাম করেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি, অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি আমাদের চেতনায় ছিলেন। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে। জীবনের অনেক সময় জেলে কাটিয়েছেন তিনি। কবি নজরুল ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে চেতনার মিল ছিল।’
কাজী নজরুল ইসলামের জীবনদর্শনের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন। একদিকে যেমন ইসলাম ধর্মের হামদ-নাত রচনা করে সাধারণ মানুষের কাছে ইসলামের বক্তব্যকে পৌঁছে দিয়েছেন। তেমনি শ্যামা সংগীত রচনা করে হিন্দু ধর্মকেও আপামর জনতার দোরগোড়ায় নিয়ে গেছেন। এমন প্রতিভা বিরল।’
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কবি যদিও চুরুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করেছেন, কিন্তু আমাদের বাংলাদেশেও অনেক জায়গায় গিয়েছেন তিনি।
ময়মনসিংহে গিয়েছেন, সেখানে আমরা তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। কুমিল্লায় গিয়েছেন, সেখানেও আমরা তার নামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান করেছি। বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে জানা যায়, কবির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়েছিল ফরিদপুরের জেলে। এটাও তাদের একধরনের আত্মিক টান। কবির প্রতি মুগ্ধতার কারণেই তাকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়েছেন, জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তাকে। কবি নজরুলের ‘চল চল চল’ গানটি আমরা রণ সংগীত হিসেবে নিয়েছি।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার জনপ্রিয় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানটি নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান কবি নজররুল ইসলামের কবিতার লাইন থেকে গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ‘বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক, জয় বাংলা’ এই লাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। একদিকে যেমন বাংলা সাহিত্যের কবি নজরুল ইসলাম, তেমনি রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখায় ভারতীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভারত সেসময় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আমাদের সুদৃঢ় সম্পর্ক আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। ’
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন। শেখ হাসিনা তার এই সম্মাননা পুরো বাঙালি জাতিকে উৎসর্গ করেন। সমাজ সংস্কারে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে ডি লিট দেওয়া হয়েছে।
আসানসোলে আজ শনিবার (২৬ মে) বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ভাষণ দেন। পরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি।
ক্যাপশান: ১) শেখ হাসিনার হাতে সম্মানসূচক ডিগ্রি তুলে দেয়া হচ্ছে
